বাংলাদেশের আইনে পরকীয়া কি ফৌজদারি অপরাধ?

বাংলাদেশ আইন নারী

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান, বাংলাদেশে বিবাহিত নারী বা পুরুষের অন্য কারো সাথে যৌন সম্পর্ক হলে তাকে আইনে 'ব্যভিচার' বলা হয়েছে

ভারতে কোন বিবাহিত নারী বা পুরুষ যদি অন্য কারো সাথে পরকীয়া সম্পর্ক করেন - তাহলে তা আর ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে না বলে রায় দিয়েছে সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট।

বাংলাদেশে পরকীয়া সংক্রান্ত আইনে ঠিক কি বলা হয়েছে?

আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠান আইন ও সালিশ কেন্দ্রের একজন আইনজীবী নীনা গোস্বামীর কাছে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত আইন খুব বেশি নেই। তবে ৪৯৭ ধারায় বলা হয়েছে যে কোন বিবাহিত ব্যক্তি যদি অন্য কোন বিবাহিত নারীর সাথে জেনেশুনে যৌন সম্পর্ক করে তাহলে তা ব্যভিচার বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে সেই পুরুষটির পাঁচ বছরের কারাদন্ড, অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান আছে।

তবে যে নারীর সাথে ব্যভিচার করা হয়েছে - তার ক্ষেত্রে আইনে কোন শাস্তির বিধান নেই, ব্যভিচারকারী নারী ও পুরুষ উভয়ের শাস্তির কথাও বলা নেই।

নীনা গোস্বামী বলেন, তবে এর অপপ্রয়োগ হয়ে থাকে, অনেক সময় অজ্ঞতার কারণেও ব্যভিচারের ঘটনায় নারীকেও আসামী করা হয়েছে এমন দেখা গেছে।

বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ আইন নারী

ছবির উৎস, Getty Images

ছবির ক্যাপশান, পরকীয়ার ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের আইন প্রায় একই রকম, বলছেন নীনা গোস্বামী

ভারতের আইন অনুযায়ী কোন স্বামী তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যভিচারের অভিযোগে মামলা করতে পারতেন, কিন্তু কোন স্ত্রীর তার স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যাভিচারের অভিযোগ এনে মামলা করার অধিকার ছিল না। বাংলাদেশের আইনে এ ক্ষেত্রে কি আছে?

প্রশ্ন করা হলে নীনা গোস্বামী জানান, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আইন একই রকম।

"এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার জন্য নারী সংগঠনগুলো অনবরত দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু পেনাল কোডে কোন সংস্কারের কাজে এখন পর্যন্ত কোন হাত দেয়া হয় নি। ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে মাথায রেখে বাংলাদেশের নারী সংগঠনগুলো পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নেবার কথা ভাববে এটাই আমি আশা করি" - বলেন নীনা গোস্বামী।

বাংলাদেশ আইন নারী

ছবির উৎস, বিবিসি

ছবির ক্যাপশান, নীনা গোস্বামী

তিনি বলছেন, বাংলাদেশে এ আইনে যেসব মামলা হয় তা কিছুটা অপপ্রয়োগের মতো করেই হয়। দেখা যায় স্ত্রীকে 'শাস্তি' দেবার জন্য বা 'হয়রানি বা নিয়ন্ত্রণ করার' ভাবনা থেকে এরকম মামলা হয়।

ভারতে মামলাটির রায়ে বিচারপতিরা বিবাহ-বিচ্ছেদের সাথে পরকীয়ার সম্পর্কের ব্যাপারটি উল্লেখ করেছেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, পরকীয়া বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে, কিন্তু একে ফৌজদারি অপরাধ বলা চলে না।

এ প্রসঙ্গে নীনা গোস্বামী বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আদালতে যাওয়ার হার খুবই কম। সরাসরি ডিভোর্স দেবার ক্ষমতাই বেশি প্রয়োগ করা হয়।

"মুসলমান-সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী ডিভোর্সের অধিকার প্রয়োগ করা যায় যে কোন সময়। কাজি অফিসে গিয়ে ডিভোর্স ফাইল করা - এটাই বেশি দেখা যায়" - বলেন মিজ গোস্বামী।

আরো পড়তে পারেন: